
ষাট/পঁয়ষট্টি বছর বয়সের এক মহিলা, সমস্ত চুল পাকা সাদা ধবধবে, পাটের মতো সাদা। কপালের চামড়ায় ভাঁজ পড়েছে, চিবুক, গালের চামড়ায়ও অসংখ্য ভাঁজ পড়েছে। সেই বুড়ি বারো শিবালয় মন্দিরের গা ঘেঁষে প্রাচীন বটগাছটার আশেপাশে, ছোট যমুনা নদীর তীরে সেই বিকেল থেকে…
ষাট/পঁয়ষট্টি বছর বয়সের এক মহিলা, সমস্ত চুল পাকা সাদা ধবধবে, পাটের মতো সাদা। কপালের চামড়ায় ভাঁজ পড়েছে, চিবুক, গালের চামড়ায়ও অসংখ্য ভাঁজ পড়েছে। সেই বুড়ি বারো শিবালয় মন্দিরের গা ঘেঁষে প্রাচীন বটগাছটার আশেপাশে, ছোট যমুনা নদীর তীরে সেই বিকেল থেকে…
আজ সকাল থেকে ইরার মনটা খারাপ। প্রতিদিনের মতো সকালবেলা উঠে নাস্তা তৈরি করেনি। ড্রয়িং রুমের ছোট্ট চৌকিটায় শুয়ে শুয়ে টি.ভি দেখছে ঠিক সেভাবে বসে সেভাবে জয় যেভাবে জয় এই চৌকিটায় এসে বসতো সেভাবে। সেদিন ইরার সকালবেলা উঠেই ব্যস্ততা শুরু হয়েছিলো।…
প্রতিদিন সকালবেলা রাহাত অফিসে বেরিয়ে যায় আর ফিরে আসে একেবারে সন্ধ্যায়। সারাদিন আর বাপ-মেয়ের দেখা হয় না ঠিকই কিন্তু রাতের খাওয়া হয় দু’জনের এক টেবিলে বসে, তারপর কিছুক্ষণের আড্ডা। তাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা এই দু’জনই। ছোট কিন্তু বাপ আর মেয়ের…
তামান্নার সঙ্গে প্রতীকের সম্পর্কটা শুরুই হয়েছিল ঝগড়া দিয়ে। তারপর একসময় ঝগড়া থেকে রুপ নেয় মৈত্রীর, বন্ধুত্বের, ভালোবাসার। ভালোবাসাই বা কীভাবে বলা যায়? প্রেমিক-প্রেমিকাদের মধ্যে একজনের পছন্দ-অপছন্দ এবং আশা-আকাংখার প্রতি আরেকজনের সম্মান থাকে, প্রতিশ্রুতি থাকে, স্বপ্ন থাকে কিন্তু তাদের হৃদয়ে এসবের…
ঈদ মানে আনন্দ, ঈদ মানে খুশী। তাই রমযানের চাঁদ দেখার পর থেকেই আরম্ভ হয়ে যায় ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি, কেনাকাটার ধুম। রাজধানীর শপিং সেন্টাগুলোতে শুরু হয়ে যায় দামি কাপড়, অর্নামেন্টস, কসমেটিকস, ফ্যাশন সামগ্রী কেনার প্রতিযোগিতা। মফ:স্বল শহর এমনকি গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারগুলোও এদিক…
প্রাপ্তির বয়স এখন বারো বছর, সবকিছু বুঝতে শিখেছে। আজকাল শিরিন কিছু বললেও হায়দার সাহেব এদিক-ওদিক তাকিয়ে প্রাপ্তিকে কাছে দেখলে নিঃশব্দে এড়িয়ে যান। আর আশে-পাশে কাউকে না দেখলে গম্ভীর মুখে শিরিনের কথার জবাব দিয়ে ভিতরে চলে যান। হায়দার সাহেব আজ সারাদিন…
ক’দিন আগে অতিবাহিত হলো মহাআনন্দের ঈদ। এদিনে সারাদেশে মুসলমানদের ঘরে ঘরে আনন্দের সীমা ছিল না। ঢাকা শহরে এ আনন্দের পূর্বাভাষ পরিলক্ষিত হয়েছিল রমযানের প্রায় শুরু থেকেই। ঈদের কয়েকদিন পূর্ব থেকেই মার্কেটগুলো সজ্জিত হয়েছিল অত্যাধুনিক সাজে, কেনাকাটায় ভিড় ছিল অস্বাভাবিক, দ্রব্যমূল্যের…
এক দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হলো। প্রকাশ্য দিনের বেলায় লুটেরারা লুট করলেও বিচার হতো না। জোর করে একজনের টাকা-পয়সা লুট করে নিয়ে গেলেও কোনো বিচার হতো না। যাকে কোনো অবস্থাতেই যুদ্ধাবস্থ থেকে কম বলা যায় না। এক ক্ষেতমজুর, হারাধন…
পুলিশেরই বা দোষ কী? প্রতিদিন সকালবেলা বাজার করার জন্য তার শ’তিনেক টাকার প্রয়োজন। এই উর্দ্ধমূল্যের বাজারে তিন’শ টাকারই বা কী দাম আছে। ছোট চাকুরী তাই চাহিদাও কম। মাত্র তিনশ টাকা। কিন্তু এই তিন’শ টাকা না পেলে তার পায়ের রক্ত মাথায়…
মমতাজের চাহিদা বেশি না। ঈদে একটা দামি শাড়ি তার সঙ্গে ম্যাচিং করে ব্লাউজ, পেটিকোট, হাতে ইমিটেশনের চুড়ি আর সামান্য কিছু কসমেটিকস। ছেলেমেয়েদের বায়না নিয়ে তার কোন দুশ্চিন্তা নেই। তারা ঠিক তার মতোই হয়েছে। ঈদের ক’দিন আগে মোখালেস মিয়া সবাইকে নিয়ে…
এই বাড়িটাকে রিনি নিজের বাড়ি ভেবেছিলো। বাড়ির প্রতিটি ইটের সঙ্গে, প্রতিটি বালুকণার সঙ্গে পাঁজরের হাড়ের মতো প্রতিটি রডের সঙ্গে মিশে আছে তার অক্লান্ত পরিশ্রম, মেধা ও সৃজণশীলতা। রিনির স্বপ্ন ছিলো একদিন তার একটা বাড়ি হবে। বিশাল অট্টালিকা নয়, এক ছেলে,…
একজন কবিকে ঘিরে ভক্তদের একটা জটলা তৈরি হয়েছে। কবির কাঁধে ঝুলানো ব্যাগ, পরণে পাঞ্জাবি আর পাজামা। কবি ভক্তদের সাথে হেসে হেসে কথা বলছেন, অটোগ্রাফ দিচ্ছেন আর টি.ভি ক্যামেরাগুলোতে চলছে বিরামহীন ভিডিও। বইমেলায় ঢুকতেই এ দৃশ্য দেখে কবি আব্দুর রাজ্জাক মুন্সির…
সাজু ক্লাস থ্রি-তে পড়ে। লেখাপড়ায় মোটামুটি ভালো। তাই ক্লাস টিচার তাকে খুব পছন্দ করেন। আর সেকারণেই পড়াশোনার পাশাপাশি তাকে সব বিষয়ে একটু বেশি জিজ্ঞেস করেন। এসব জিজ্ঞাসার মধ্যে অনেককিছু প্রয়োজনীয় আবার কিছু অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রাসঙ্গিক। যেমন: কার বাবা কী করে?…
হাতের মোবাইলটাই মিথিলার নিঃসঙ্গতা থেকে মুক্তির একমাত্র অবলম্বন, মোবাইলটাই তার সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করার সবচেয়ে ভালো বন্ধু। মোবাইলের সে অনেকের সঙ্গে কথা বলে যাদের সে চেনে না, কোনদিন দেখেনি, হয়ত কোনদিন দেখাও হবে না। আগে কখনো খারা লাগলে মাকে মোবাইল করতো,…
দু’জনেরই পরষ্পরের প্রতি ভালোবাসা আছে, বিশ্বাস আছে, নির্ভরতা আছে, একটা বিষয়ে দু’জনের বিশ্বাস গভীর আর সেই বিশ্বাসটা হলো, বন্ধুত্ব। প্রায় বেশিরভাগ বিষয়ে তাদের দৃষ্টিভঙ্গী একই, হয়ত সে কারণে দু’জনের বন্ধুত্বটা আরো বেশি। স্বার্থের সম্পর্ক নয়, রক্তের সম্পর্ক নয়, সম্মানের সাথে…
আজ আলতা ঢাকা যাবে। মিয়া বাড়ির ছোট মেয়ে রুমা ঢাকায় থাকে, তার একমাত্র মেয়ে সবেমাত্র হাঁটি হাঁটি পা পা করে হাঁটতে শিখেছে, তার সাথে খেলা করার জন্য, তাকে সঙ্গ দেয়ার জন্য আর রুমার সাংসারিক কাজে একটু-আধটু হাত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য…
ক’দিন থেকে রুপা অসুস্থ বোধ করছে, মাথাটা কেমন যেন ঝিমঝিম করছে, সবসময় একটা বমি বমি ভাব লেগেই আছে, সে লক্ষ্য করেছে তার শরীরে কিছু অস্বাভাবিক পরিবর্তনও শুরু হয়েছে। কাকে বলবে রুপা তার এই অসুস্থতার কথা? তার মনে হচ্ছে এটা যেন…
দোলার মোবাইলের মনিটরে রাখা রোমানের ছবিটা সে মাঝে মাঝেই বের করে দেখে, ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে মাঝে মাঝে চুমু দেয়। বন্ধু-বান্ধবী কিংবা সহকর্মীদের অনেকেই বিষয়টা জানে, কেউ কেউ হাসি ঠাট্টা করে, আবার কেউ কেউ ঈর্ষা করে। তাতে দোলার কিছু আসে যায়…
মেয়েটির বয়স আর কতোই বা হবে বড় জোর এগারো বা বারো। অথচ বিয়ের জন্য পাত্র সন্ধানের কাজ শুরু হয়েছে আরো বছর খানেক আগে। গায়ে গহনা, পায়ে আলতা, নাকে নোলক, মাথায় ঘোমটা লাগিয়ে নারীত্ব শেখানোর কাজ শুরু হয়েছে সেই সাত/আট বছর…