একজীবন

একটাই জীবন, এই তো হলো শুরু, এই বুঝি হয় শেষ,

ক্ষুধা দিয়ে হলো শুরু খাদ্য দিয়ে বুঝি হয় শেষ।

বিরহ দিয়ে হলো শুরু প্রেম দিয়ে বুঝি হয় শেষ,

কান্না দিয়ে হলো শুরু, হাসি দিয়েই বুঝি শেষ।

 

তখন শৈশব কাল, ক্ষুধার রাজ্যে তখন আমার জীবন,

একমুঠো ভাত, একখানা রুটি আমার স্বপ্ন তখন।

বড় বাড়ির দোতলা থেকে ভেসে আসা বিরিয়ানির ঘ্রানে ছুটে যায় মন,

পাইনিতো খেতে কভু ঘ্রাণেই অর্ধ ভোজন।

 

চৌধুরী বাড়ির মেয়ে শাহজাদী তার নাম,

অপরূপ সুন্দরী বলে পাড়া জুড়ে তার সুনাম,

আমার মনে স্বপ্ন জাগাতো, কখনো কখনো হয়তো ভুলে জপতাম তার নাম,

একদিন হৃদয় ভেঙে চলে গেলো শাহজাদী, আমায় দিয়ে বদনাম।

 

ঢাকার রাস্তা, পিচ ঢালা পথ, বেকার যুবক হতাশায় ডুবে মন

জীবীকার তরে হেঁটে চলি আমি, জীবন গড়ার স্বপন,

একদিন ধরা দিলো সোনার হরিণ,

মসৃণ হলো জীবন-জীবীকার বন্ধুর পথ, আনন্দে নাচে মন।

 

লতাগুল্ম, ডালপালা ছড়ানো এক বটগাছ আমি,

জীবন সূর্য এখন গোধূলি লগ্নে, কখন ডুবে যায় জানেন অন্তর্যামী।

টেবিলে সাজানো পোলাও বিরিয়ানি, মিষ্টান্ন রাজভোগ, খাবার সব দামি দামি,

আমার খেতে বাধা, নাতি-নাতনীরা খায় চেয়ে রই শুধু আমি।

 

হঠাৎ সেদিন শাহজাদীর সাথে দেখা একি তার হাল,

ধবধবে পাকা চুল তার, চৌচির যেনো গাল।

ফোকলা মুখে হেসে বলে, কেমন আছো তুমি? দেখা হয়নি কতকাল,

’’ভালো আছি, ভালো আছি, জীবনটা নিজেই যেনো এখন জঞ্জাল।’’

 

শাহজাদী বাড়িয়ে দিলো হাত, ’’এসো হাঁটি একসাথে, যে নিয়ে গিয়েছিল সে ছেড়ে দিয়েছে হাত,

রূপ-যৌবন, কিছুই নেই আজ তবুও এসো, ধরো আমার হাত।’’

বললাম, ’’যে এসেছিল সেও গিয়েছে চলে, এখন গোধুলি, কতদূর আর যাবে, এখনি নামবে রাত?’’

শাহজাদী বলে হেসে, বেলা নেই আর, এই তো, গন্তব্য সাড়ে তিন হাত।

সমাপ্ত।

Facebook Twitter Email

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। কবিতার পাশাপাশি সামাজিক অসঙ্গতি নিয়ে শুরু হলো ছোটগল্প, উপন্যাস লেখা। একে একে প্রকাশিত হতে থাকলো কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস। প্রকাশিত হলো অমর একুশে বইমেলা-২০২০ পর্যন্ত ০১টি কাব্যগ্রন্থ, ১৪ টি উপন্যাস, ০৪ টি কিশোর উপন্যাস, ০১ টি গল্পগ্রন্থ এবং ০১ টি ধারাবাহিক উপন্যাসের ০৩ খণ্ড। গ্রন্থ আকারে প্রকাশের পাশাপাশি লেখা ছড়িয়ে পড়লো অনলাইনেও। লেখার শ্লোগানের মতো প্রতিটি উপন্যাসই যেন সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি।

Posted in কবিতা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*