শুভঙ্করের ফাঁকি

দোলার মোবাইলের মনিটরে রাখা রোমানের ছবিটা সে মাঝে মাঝেই বের করে দেখে, ডানে বাঁয়ে তাকিয়ে মাঝে মাঝে চুমু দেয়। বন্ধু-বান্ধবী কিংবা সহকর্মীদের অনেকেই বিষয়টা জানে, কেউ কেউ হাসি ঠাট্টা করে, আবার কেউ কেউ ঈর্ষা করে। তাতে দোলার কিছু আসে যায় না। কারণ তাদের সম্পর্কটা স্বামী-স্ত্রীর, ঠুনকো আবেগে তাদের সম্পর্ক বাঁধা নয়, আইন ও সমাজ স্বীকৃত এক মজবুত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। এখানে হাসি-ঠাট্টার কিছু নেই, বিদ্রম্নপের কিছু নেই তবু সমাজের পরশ্রীকাতর চোখ যেন বার বার তীর্যক দৃষ্টি ছুঁড়ে।
দোলা ভালো গান গায়, রোমান ভালো হারমোনিয়াম বাজায় কিন্তু তার গানের কণ্ঠ ভালো না। সে নেপথ্য শিল্পী, দোলার গানের জগতে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা রোমান। একজন নেপথ্য শিল্পী আরেকজন মঞ্চে গান গেয়ে শ্রোতাদের আবেগের সাগরে ডুবিয়ে দেয়া শিল্পী।
মঞ্চে শত শত দর্শকের সামনে “তুমি যে আমার, তুমি যে আমার’’ গান গাইতে গাইতে একদিন দু’জনে দু’জনার হয়ে যায়। আবেগের বশে একদিন দু’জনে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি জমায়।
উভয় পক্ষের অসম্মতি থাকলেও শেষ পর্যনত্ম তাদের আবেগ, তাদের আশা-আকাঙ্খার কথা চিনত্মা করে রোমানের বাবা-মা ধুমধুাম অনুষ্ঠান করে নতুন বউকে ঘরে তোলে। বড় বউ হিসেবে সংসারের চাবি তুলে দেয় দোলার হাতে। সংসারে দারিদ্র নেই কিন্তু দোলার চাহিদারও শেষ নেই, তার আকাশ ছুঁয়ে দেখার স্বপ্ন| বড় বোন ঢাকায় থাকে, দুলাভাই ব্যবসা করে, বড় আপা সবসময় গাড়ি নিয়ে বেড়ায়, তার জীবনে গাড়ি বাড়ি হবে না এটা তার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয়। রোমান একটা লোকাল এন.জি.ও’তে চাকরি করে। দোলা শিক্ষকতা করে, মাস শেষে যখন রোমান আর তার বেতন হিসেব করে তখন তার আকাশ ছুঁয়ে দেখার স্বপ্নটা গাঢ় কালো মেঘে ঢেকে যায়। তার হৃদয়ের এই গাঢ় কালো মেঘ সরিয়ে পূর্ণিমার চাঁদের আলো নিয়ে মাঝে মাঝে অনুগত ছাত্রের মতো হাজির হয় নীরেশ মুখার্জী।
নীরেশ মুখার্জী দোলার বান্ধবী মুনমুন মুখার্জীর ভাই। সেই সূত্রে দোলার সঙ্গে তার পরিচয়। প্রথম পরিচয়ের পর থেকেই দু’জনের আলাপচারিতা ছিল খোলামেলা, কখনো মাত্রাতিরিক্ত, কখনো অশালীনও। কয়েকদিন পরেই নীরেশের নামটাকে সংক্ষিপ্ত এবং ধর্মীয় সংস্কার মুক্ত করার জন্য দোলা তার নাম দিলো, হৃদয়। সেদিন থেকে দোলা সবসময় নীরেশ মুখার্জীকে হৃদয় বলে ডাকে।
সেদিন বিকেলবেলা রোমান বাসায় ছিল না। স্কুল থেকে ফিরে দোলা হৃদয়কে মোবাইল করলো, হ্যালো হৃদয়।
জি ম্যাডাম বলো।
আমি আবার কবে থেকে ম্যাডাম হলাম?
শত শত ছাত্র-ছাত্রী পড়াও, আমার মতো চেইন স্মকার ছাত্রকে সিগারেট ছাড়তে বাধ্য করতে পারো, তুমি তো অবশ্যই একজন ভালো শিক্ষক। তাই আমার মতো অনুগত ছাত্রের তো তোমাকে ম্যাডাম বলেই ডাকা উচিত।
হ্যাঁ আমি ভালো শিক্ষক হতে পেরেছি, তুমি এখন ব্যবসা করলেও একসময় তো মনোবিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়া করেছ কিন্তু তুমি তো মনোবিজ্ঞানী হতে পারোনি।
কোনদিন মনোবিজ্ঞানী হওয়ার ইচ্ছা ছিল না, তবুও একটা সার্টিফিকেট অর্জনের জন্য লেখাপড়া করেছি। আমার বরাবরই ইচ্ছা ছিল ব্যবসায়ী হওয়া, হয়েছি-ই তো।
শুধু হয়েছ না, অল্প বয়সে অনেক বড় ব্যবসায়ী হয়েছ।
এখন বলো কেমন আছ?
মনটা ভালো নেই।
কেন? হঠাৎ করে আবার মনের কী হলো?
অনেকদিন থেকে তোমার সঙ্গে দেখা হচ্ছে না, চাইনিজ খাওয়া হচ্ছে না।
সেজন্য তোমার মন খারাপ?
হ্যাঁ তুমি তো জানোই আমি একটু আলাদা রকমের মেয়ে, সবসময় হাসি-ঠাট্টা, আড্ডা, গান বাজনা আর ঘোরাঘুরি নিয়ে চলতে চাই। আজ মোবাইল করার আরো একটা কারণ আছে তবে তোমার সঙ্গে দেখা করাটাই আসল।
আরেকটা কারণ কী?
কাল একবার বাজার গেছিলাম তো।
তারপর?
একটা শাড়ি দেখেছি, নিতে চাইলাম, সাহেব নিয়ে দিলো না।
তোমার মতো সুন্দরী মেয়েকে কেউ না করতে পারে? আমি হলে তো সঙ্গে সঙ্গে কিনে দিতাম।
সেজন্যই তো তোমাকেই বলছি, দাও না পিস্নজ, তোমার পছন্দের কালারের শাড়ি। আমি শাড়িটা পরে তোমার পাশে দাঁড়ালে খুব ভালো মানাবে।
শাড়িটা পরে আগে আমার পাশেই দাঁড়াবে?
অবশ্যই।
কত দাম শাড়িটার?
এই তিন হাজার মাত্র।
আচ্ছা ঠিক আছে, কিনে দিবো?
পছন্দের শাড়ি বেশিদিন দোকানে পড়ে থাকে? টাকার অভাবে শাড়িটা কেউ নিয়ে গেলে আমার খুব খারাপ লাগবে। তুমি যদি-
আচ্ছা আজকেই কিনে দিবো।
থ্যাংক ইউ হৃদয়, আমি জানতাম ও না দিলেও তুমি আমাকে না করতে পারবে না।
তাহলে তুমি ইডেন চাইনিজ রেস্টুরেণ্টে চলে এসো।
ইডেনে?
হ্যাঁ তাছাড়া আর কী, চাইনিজ খাওয়াও হবে আর তোমাকে শাড়ি কেনার টাকা দেওয়াও হবে।
কখন আসবো।
বিকেল ঠিক পাঁচটায়।

অনামিকার বাবা-মা দু’জনেই মারা গেছে অনেকদিন আগে। তখন থেকে ভাই-ভাবীর সংসারে বড় হয়েছে। ভার্সিটিতে পড়ার সময় এক ছেলের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কিন্তু সংসার টিকেনি। তারপর আবার ভাই-ভাবীর সংসারে ফিরে এসেছে। ভাই-ভাবী দু’জনে ব্যাংকে চাকরি করে, সকালবেলা দু’জনে চলে যায় ফিরে আসে একেবারে বিকেলে। কোন কোনদিন সন্ধ্যা হয়ে যায়।
অনামিকার সঙ্গে রোমানের সম্পর্কটা বেশ হৃদ্যতাপূর্ণ। প্রতিদিন দু’জনে অনেকক্ষণ কথা বলে, যেন কথার শেষ নেই। দু’জনে দেখা করে, চোখে চোখ রেখে কথা বলার সুযোগ খুব একট পায় না। তবুও সুযোগ পেলে দেখা করে খুব গোপনে, তাদের সম্পর্কটা পৃথিবীর কাউকে জানতে দিতে চায় না। তারা দু’জনে একটা আলাদা জগত তৈরি করতে চায়। হোক সবার কাছে সে জগৎ নিষিদ্ধ, সমাজ এবং সংসারে নিন্দনীয়।
প্রায় দিনই রোমান মোটর সাইকেলে করে দোলাকে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে তার অফিসে যায়। অফিসে রোমানের আরেকটা মোবাইল সেট আছে, সেই সেটটা শুধুমাত্র অনামিকার সঙ্গে কথা বলার জন্য। অফিসের সেটটার মধ্যে যে সিম কার্ডটা আছে তার নাম্বার অনামিকা ছাড়া আর কেউ জানে না। রোমান অফিসে বসেই হাতের প্রয়োজনীয় কাজ সেরে অনামিকার সঙ্গে কথা বলে।
আজো ব্যতিক্রম ঘটলো না। রোমান অনামিকাকে মোবাইল করলো, হ্যালো অনামিকা।
অনামিকা রিসিভ করেছে, তার কণ্ঠে অভিমানের সুর, তোমার এতক্ষণে সময় হলো?
রাগ করেছ?
না খুশি হয়েছি।
রাগ করো না পিস্নজ!
তোমাদের ছেলে মানুষদের এই একটা দোষ, তোমরা কোনটাই ছাড়তে পারো না। ঘরেরটাও ছাড়তে পারো না আবার বাইরেরটাও চাই।
অনামিকা কী হয়েছে বলবে তো?
দোলার গাওয়া গান রোমানের মোবাইলের রিং বেজে উঠল, রোমান রিসিভ করলো, হ্যালো।
তোমার মোবাইলের রিং-টোন হিসেবে বউয়ের গাওয়া গান সেট করে নিয়েছ? এতই যদি বউয়ের প্রতি টান, তবে আবার প্রেম করো কেন?
আমি তোমার কথা ঠিক বুঝতে পারছি না।
তুমি আমার সঙ্গে কথা বলেছ গতকাল সকালে, বিকেলে আমার একটু অসুবিধা ছিল তাই কথা বলতে পারিনি, আজ তো একটু আগে কথা বললেও পারতে, নাকি?
সরি অনামিকা ভুল হয়ে গেছে, তাহলে এখন আর কথা না বাড়িয়ে একেবারে বিকেলে বাসায় আসি।
বাসায় কেন?
মাফ চাইতে।
অনামিকা হেসে ফেলল, না, না বাসায় আসতে হবে না, আমি তোমাকে মোবাইলেই মাফ করে দিলাম।
পিস্নজ একবার আসি। অনেকদিন তোমার সঙ্গে দেখা হয় না।
কিন্তু বিকেলে তো ভাই-ভাবী দু’জনে বাসায় আসবে।
তাহলে টিফিন পিরিয়ডে আসি।
এসো কিন্তু শর্ত আছে।
কী শর্ত?
ভাই-ভাবী বাসায় আসার আগেই চলে যেতে হবে।
রাজি।
আরো একটা শর্ত আছে।
কী শর্ত?
মোবাইলে যেভাবে কথা বলো তাতে তো মনে হয় হাতের কাছে পেলে ছুঁয়ে দেখতে চাইবে, এটা কিন্তু একেবারে চলবে না, প্রোমিজ।
এতবড় শর্ত দিও না পিস্নজ।
উঁহু, তাহলে তো তোমার উদ্দেশ্য খারাপ, আসতে হবে না।
আচ্ছা প্রোমিজ।

রোমানের অফিস থেকে অনামিকাদের বাসা প্রায় এক কিলোমিটার। রোমান যাওয়ার আগে অনামিকা তাকে একটা মিস্‌ কল দিতে বলেছিল। অনামিকা কাপড় পরছিল এসময় তার মোবাইলের রিং একবার বেজেই থেমে গেল, অনামিকা আরো কিছুক্ষণ পর বাবলিকে পাশের দোকান থেকে নানত্মা আর কোল্ড ড্রিঙ্কস আনতে পাঠালো।
সে বলল, আপা কোল্ড ড্রিঙ্কস আনতে তো দূরে যেতে হবে।
যেতে হলে যাবি।
অনামিকা বাবলিকে টাকা দিতেই সে চলে গেল।
বাবলি চলে যাওয়ার পর অনামিকা রোমানকে মোবাইল করলো, হ্যালো।
অনামিকা বলল, দরজা খোলা আছে কলিং বেল দেওয়ার প্রয়োজন নেই, সোজা চলে এসো।
কয়েকমিনিট পর রোমান দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলো।
অনামিকা দরজা বন্ধ করে ড্রয়িং রম্নমে ফিরে এলো। কিছুক্ষণ অপলক দৃষ্টি বিনিময়, তারপর রোমান বলল, কি দাঁড়িয়ে রাখবে?
অনামিকা চমকে উঠলো, বসো।
রোমান সোফায় বসলো, অনামিকা আজ তোমাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
তোমাকেও।
কিন্তু তুমি আমাকে আসতে বলোনি, তোমাকে দেখতে ইচ্ছা করছিল তাই আমি নিজেই এলাম।
সবসময় দেখতে ইচ্ছা করে, না?
সবসময় কাছে থাকলে তখন আর সুন্দর লাগবে না, শুধু ঝগড়া লাগবে।
হ্যাঁ তা লাগবেই কিন্তু সেই ঝগড়ার মধ্যে আনন্দ আছে। আসল কথা সেটা না, ছেলেদের শুধু প্রেম করতে ইচ্ছা করে দায়িত্ব নিতে ইচ্ছা করে না। তাই বলছ কাছে থাকলে ঝগড়া লাগবে।
কলিং বেল বেজে উঠলো, রোমানের যেন বুক শুকিয়ে গেল, কেউ আসেনি তো?
আরে না, বাবলিকে কোল্ড ড্রিঙ্কস আনতে পাঠিয়েছিলাম।
অনামিকা দরজা খুলে দিলো, বাবলি বাসায় ঢুকলো।
অনামিকা বলল, একটা ট্রেতে করে সব নিয়ে আয়।
জি আপা।
অনামিকা বলল, তুমি একটু ইজি হয়ে বসো, মনে হয় খুব ভয় পেয়েছ। মনের মধ্যে ভীতি থাকলে আবেগ নষ্ট হয়ে যায়।
রোমান মুচকি হাসলো, অনামিকা চলো আজ একবার কোথাও গিয়ে বসি, একটু নিরিবিলি পরিবেশে।
এই শহরে তো নিরিবিলি কথা বলার মতো জায়গা ঐ একটাই।
কোথায়?
চাইনিজে।
কেউ যদি দেখে ফেলে?
না, দেখবে না, ওখানে সবাই চাইনিজ খেতে যায়, এরকম রোমান্টিক আলাপের জন্য ছোট ছোট কেবিন আছে, কেউ দেখার ভয় নেই।
কবে যাবে?
আজই চলো।
অনামিকার জ্বল জ্বল চোখ দু’টো থেকে দু’য়েকফোটা পানি গড়িয়ে পড়ল।
কখন যাবে?
বিকেল পাঁচটায়।
আমি লবিতে থাকবো, তুমি এলে ভিতরে চলে যাবো।
আচ্ছা।

সীমিত আলো। সিলিংয়ে কয়েকটা ঝাড়বাতি ঝুলানো আছে, দেওয়ালে কয়েকটা রঙীন বাতি ঝুলছে। একটা বড় টেবিলের চারপাশে অনেকগুলো চেয়ার সাজানো আছে, পর্দা ঘেরা কয়েকটা কেবিন, যার ভিতর থেকে তরম্নণ-তরম্নণীদের কণ্ঠস্বর ভেসে আসছে। গেট দিয়ে ঢুকতেই একজন বয় কেবিনের দিকে হাত বাড়িয়ে বলল, স্যার কেবিনে যান, কেবিন ফাঁকা আছে।
দু’জনে একটা কেবিনে ঢুকলো। কিছুক্ষণ পর একজন বয় ভিতরে গলা ঢুকিয়ে জিজ্ঞেস করলো, স্যার কী লাগবে?
দোলা অর্ডার দিলো।
বয় চলে গেল।
হৃদয় দোলার একটা হাত নিজের হাতের মধ্যে নিয়ে তার চোখে চোখ রাখলো।
দোলা জিজ্ঞেস করলো, কী?
তুমি খুব সুন্দর।
হ্যাঁ, ভালোভাবে সেজেগুঁজে বেড়ালে আরো সুন্দর লাগবে।
আরো বেশি সাজতে চাও?
হ্যাঁ, এই মনে করো মাসে যদি একবার ফেসিয়াল করি, দু’বার ভ্রু-প্লাগ করি, ভালো ভালো শাড়ি কিংবা থ্রি-পিস পরি তবে আরো ভালো লাগবে কিন্তু পাবো কোথায়? বলো?
হৃদয় দোলাকে আরো কাছে টেনে নিয়ে আবেগজড়িত কণ্ঠে বলল, আমি সাজাবো তোমাকে।
দোলা হৃদয়ের গায়ে হেলান দিয়ে বলল, সত্যি তো!
হৃদয় দোলার কাঁদে রাখা হাতটা দিয়ে তার বাহুতে চাপ দিলো, সত্যি, সত্যি, সত্যি।
হৃদয় তোমার সঙ্গে আমার এত পরে পরিচয় হলো যে, চাকরি আর সংসারের চিনত্মায় আমি যেন হাঁপিয়ে উঠেছি, মনে হচ্ছে তোমাকে দেওয়ার মতো আমার কিছু নেই।
এখনো তোমার বয়স পঁচিশ পার হয়নি। তাতেই নিজেকে মূল্যহীন ভাবছো? তোমার কিচ্ছু হয়নি, তুমি আমার কাছে একেবারে নতুন, আকর্ষণীয়, তোমাকে পেয়েই আমি খুব খুশি হয়েছি। তুমি আমার কাছে খুব, খুব সুন্দর, বলে হৃদয় দোলার চিবুকে চুমু দিবে এসময় বয় পর্দা ফাঁকা করে টেবিলের ওপর ট্রে রাখলো।
স্যুপ খেতে খেতে দোলা বলল, বাজারে যে দোকানে শাড়িটা দেখেছি, আমি কিন্তু এখান থেকে বেরিয়েই সেই দোকানে যাবো। শাড়িটা নিয়েই বাসায় ফিরবো।
হৃদয় কিছু বলল না।
দোলা বলল, টাকা দাও।
হৃদয় তার পকেট থেকে টাকা বের করে দোলাকে দিলো।
দোলা টাকা গুণে দেখে বলল, এটা তো শুধু শাড়ির টাকা হলো, তুমি আরো সুন্দর করে সাজতে বললে না, পার্লারের টাকা দাও আরো এক হাজার।
হৃদয় দোলাকে আরো এক হাজার টাকা দিলো।
টাকা পাওয়ার পর যেন দোলার কণ্ঠস্বর পরিবর্তন হলো। টাকা হাতে পাবার আগে তার মধ্যে কোন ব্যসত্মতা ছিল না, টাকা পাবার সঙ্গে সঙ্গে যেন সে খুব ব্যসত্ম হয়ে পড়ল। সে একবার ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল, দেরি হয়ে গেল, তাড়াতাড়ি দোকান যেতে হবে তারপর বাসায়, আর বলো না জীবন কী যে যন্ত্রণাময়, একটু শান্তি নেই।
খাওয়া শেষে হৃদয় একবার দোলার হাতটা নিজের হাতে নেওয়ার চেষ্টা করলো কিন্তু দোলা তাড়াতাড়ি হাত টেনে নিলো।
দু’জনে সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে দোলা যেন চমকে উঠল। রোমান আর অনামিকা সিঁড়ি দিয়ে উঠছে। দেখাও হয়েছে একেবারে চোখে-চোখে।
দোলার বুক কেঁপে উঠলো, হৃদপি- দ্রম্নতগতিতে চলতে লাগল। তার মুখ থেকে অষ্ফুটস্বরে একটা কথা বেরিয়ে এলো, রোমান তুমি?
সমাপ্ত

Facebook Twitter Email

চোখের সামনে যেকোন অসঙ্গতি মনের মধ্যে দাগ কাটতো, কিশোর মন প্রতিবাদী হয়ে উঠতো। তার বহিঃপ্রকাশ ঘটতো কবিতা লেখার মধ্য দিয়ে। ক্ষুধা ও দারিদ্রের বিরুদ্ধে, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কবিতা। কবিতার পাশাপাশি সামাজিক অসঙ্গতি নিয়ে শুরু হলো ছোটগল্প, উপন্যাস লেখা। একে একে প্রকাশিত হতে থাকলো কাব্যগ্রন্থ, উপন্যাস। প্রকাশিত হলো অমর একুশে বইমেলা-২০২০ পর্যন্ত ০১টি কাব্যগ্রন্থ, ১৪ টি উপন্যাস, ০৪ টি কিশোর উপন্যাস, ০১ টি গল্পগ্রন্থ এবং ০১ টি ধারাবাহিক উপন্যাসের ০৩ খণ্ড। গ্রন্থ আকারে প্রকাশের পাশাপাশি লেখা ছড়িয়ে পড়লো অনলাইনেও। লেখার শ্লোগানের মতো প্রতিটি উপন্যাসই যেন সামাজিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি।

Posted in ছোটগল্প

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*